নোয়াখালী: স্বামীর সঙ্গে ঘর বাঁধা হলো না নববধূ তাসলিমার। তার বৃদ্ধ দাদীও পারলেন না শেষ বয়সে নাতনীর জামাই বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার আশা পূরণ করতে। কারণ
হাতিয়ার নলেরচরে ট্রলারডুবিতে নববধূ তাসলিমা ও তার দাদীসহ নিহত হন সাতজন।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটের দক্ষিণ-পশ্চিমে মেঘনা নদীতে বরযাত্রীসহ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ডুবির এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও আটজন।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে হাতিয়ার কেয়ারিংচর থেকে ৮০-৮৫ জন বরযাত্রী নিয়ে ডালচর যাওয়ার পথে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
শ্বশুর বাড়ি থেকে নববধূকে নিয়ে ট্রলার করে ভোলার মনপুরার নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন শরীফ উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ৭৫ থেকে ৮০ জন। ট্রলারটি টাংকিরখাল-ঘাসিয়ারচর এলাকার মেঘনা নদীতে পৌঁছলে, জোয়ারের মুখে পড়ে। স্রোতের তোড়ে ধীরে ধীরে ডুবে যায় নৌযানটি। কয়েকজন সাঁতরে কূলে উঠলেও বেশিরভাগ যাত্রী নিখোঁজ হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে কোস্টগার্ডসহ প্রশাসনের লোকজন।
এ সময় নববধূ তাসলিমা এবং তার দাদী নুর জাহানসহ সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। এরা হচ্ছেন কনে তাসলিমা বেগম (২২), তার দাদী নুর জাহান (৭০), রায়হেনা বেগম (৩০), আসমা বেগম (২৬) তার মেয়ে লামিয়া (২), লিলি আক্তার (৮) ও হোসনে আরা বেগম রুপা।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ডুবো চরের সাথে ট্রলারটির ধাক্কা লাগলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ট্রলারের যাত্রীরা সকলে স্থানীয় নলের চরের ইব্রাহিম সদগারের মেয়ের বিয়ের বরযাত্রী ছিলেন।
উদ্ধার কাজে সাহায্যকারী স্থানীয় রফিক ও পুলিশের এক কনস্টেবল সোহাগ জানান, ট্রলারে থাকা অন্তত ৩০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদের উদ্ধারে পুলিশসহ স্থানীয়রা কাজ করছেন। ট্রলারের যাত্রীরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাওয়ায় উদ্ধার করতে সমস্যা হচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান এখন পর্যন্ত আটজন নিখোঁজ রয়েছেন। এরা হচ্ছেন জাকিয়া বেগম (৫৫), হাছিনা (৭), নারগিস বেগম (৪), হালিমা বেগম (৪), লামিয়া (৩), নিহা (১), আমির হোসেন (২) ও আলিফ (১)।